[english_date]
[bangla_date]
[hijri_date]

টানা কয়েক দিনে কুশিয়ারার পানি বাড়ছেই , প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা

প্রিয় সিলেট
প্রকাশিত 05 July, Friday, 2024 01:41:47
টানা কয়েক দিনে কুশিয়ারার পানি বাড়ছেই , প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা

সিলেটে তৃতীয় দফার বন্যা পরিস্থিতিতে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি নতুন করে শঙ্কা তৈরি করেছে। বিশেষ করে জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় কুশিয়ারা নদীর পানি উপচে ও বিভিন্ন এলাকায় ডাইক ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে পানিবন্দী মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি সব পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাশাপাশি দুটি নদীর পানি বিভিন্ন পয়েন্টে আগের তুলনায় বেড়েছে।

জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার দিয়ে প্রবাহিত কুশিয়ারা নদীর কয়েকটি স্থানে ডাইক ভেঙে পানি ঢুকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে জকিগঞ্জ উপজেলা সদরের ছবড়িয়া, রারাই, বাখরশাল, নরসিংহপুর ও পৌর এলাকা প্লাবিত হয়। এ ছাড়া ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর পানি ডাইক উপচে বাজারে প্রবেশ করছে। এতে ফেঞ্চুগঞ্জ বাজারসহ মধ্যবাজার, পূর্ববাজারসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

জকিগঞ্জের নরসিংহপুর এলাকার বাসিন্দা রাজ্জাক আহমদ বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে পানি ঢুকতে থাকে। এতে তাদের গ্রামসহ আশপাশের চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গত দুই ধাপে তেমন কিছু না হলেও তৃতীয় ধাপে কুশিয়ারা নদী তাদের মধ্যে শঙ্কা বাড়াচ্ছে। ডাইক ভেঙে ও কোথাও কোথাও নদীর পানি উপচে পড়ছে।

ছবড়িয়া গ্রামের ইয়াসিন আহমদ বলেন, মঙ্গলবার রাতে কুশিয়ারা নদীর পানি প্রথমে ডাইক উপচে পড়ে। পরে তাদের এলাকায় ডাইক ভেঙে পানি ঢুকতে থাকে। এতে গ্রামের প্রায় প্রতিটি ঘরবাড়িতে পানি ওঠে। এর পর থেকে পানি ঢোকা অব্যাহত আছে। এতে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে বিয়ানীবাজার উপজেলার দেউলগ্রাম, গোবিন্দশ্রী, আঙ্গুরা মোহাম্মদপুর, আলীনগর চরখাই এলাকায় কুশিয়ারা নদীর পানি উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। দেউলগ্রামের বাসিন্দা আহমদ হোসেন বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের বন্যায় তেমন সমস্যা না হলেও তৃতীয় ধাপে এসে তিন দিন ধরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিপাকে আছেন। ঘরের মধ্যে প্রায় হাঁটুসমান পানি। পরিবারের সদস্যরা স্বজনদের বাড়িতে অবস্থান করছেন।

উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় গত বুধবারের তুলনায় বৃহস্পতিবার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তিনটি উপজেলার সীমান্তবর্তী নদ-নদীগুলোর পানিও বৃহস্পতিবার কমেছে।

এদিকে নগরের ভেতরে বিভিন্ন এলাকা বৃহস্পতিবারও জলমগ্ন অবস্থায় ছিল। পানিবন্দী মানুষ নিজেদের স্বজনদের বাড়িতেই উঠছেন।

নগরের তেররতন এলাকার বাসিন্দা রফিক আহমদ বলেন, এক মাসের মধ্যে ছয়বার এলাকাবাসী পানিবন্দী অবস্থায় কাটিয়েছেন। ঈদের সময়ও তারা পানিবন্দী ছিলেন। মূল সড়কে হাঁটুর ওপরে পানি ভেঙে যাওয়া-আসা করতে হয়। ঘরের মধ্যে হাঁটুসমান পানি।

তিনি বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই শাহজালাল উপশহর ও তেররতন এলাকায় পানি জমে যাচ্ছে। এর স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।

পাউবোর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর এলাকার সঙ্গে যুক্ত হওয়া নদ-নদীর পানি কিছুটা কমেছে। এতে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলা চলে। তবে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পয়েন্টগুলোতে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেট জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, তৃতীয় দফায়ও সিলেটের ১৩টি উপজেলার সব কটির বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জেলার ৬৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে ২০৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৯ হাজার ২৩৪ জন আশ্রয় নিয়েছেন।